ঘরে বসেই ভুরু আকর্ষনীয় করবেন যেভাবে

চেহেরার সাথে মিলিয়ে মানানসই ভ্রু

চাহনির গভীরতা, মুখাবয়বের গঠন কিংবা মনের আবেগ সবকিছুতে ভুরুর রয়েছে একটি নীরব কিন্তু তীব্র ভূমিকা।

আমরা অনেকে সময়ই বলি, চোখ যেন মনের কথা বলে। কিন্তু এই মনের দরজার পাহারাদার ‘ভুরু’ তার যে নিজস্ব ভাষা আছে, তা হয়তো অনেকেই খেয়াল করি না। চাহনির গভীরতা, মুখাবয়বের গঠন কিংবা মনের আবেগ সবকিছুতে ভুরুর রয়েছে একটি নীরব কিন্তু তীব্র ভূমিকা।

সময় পাল্টেছে, রূপচর্চার ধারা বদলেছে। চিকন ভুরুর জায়গা করে নিয়েছে মোটা ও ঘন ভুরু। পারসোনা রূপচর্চাকেন্দ্রের পরিচালক নুজহাত খান জানালেন, এখন অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে ভুরু ঘন করতে চান। কারণ, পাতলা ভুরু যেমন স্বভাবজাত, তেমনি খুশকি, ছত্রাক কিংবা নিম্নমানের প্রসাধনী ব্যবহারে ভুরু পড়েও যেতে পারে।

তাই বলে আবার, চিন্তার পরবেন না। ঘরে বসেই কিছু সহজ পদ্ধতিতে ভুরু ঘন ও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।
প্রাকৃতিক উপায়ে ভুরু ঘন করার কিছু উপায়:
ক্যাস্টর অয়েলর ব্যবহার

প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে তুলায় ক্যাস্টর অয়েল নিয়ে ভুরুর ওপর আলতো করে ম্যাসাজ করুন। এটি ভুরুর গোঁড়ায় রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে দ্রুত ফল দিতে পারে। ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, আগে বেবি পাউডার দিয়ে ত্বক শুষ্ক করে নিতে পারেন।
পেঁয়াজের রসের ব্যবহার

পেঁয়াজের রসও কার্যকর, তবে চোখে জ্বালা করতে পারে। তাই খুব সাবধানে তুলার সাহায্যে ভুরুর উপর লাগাতে হবে।
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার ব্যবহার

এই রস ভুরুর গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। তবে যাদের অ্যালোভেরা ব্যবহারে ফুসকুড়ি ওঠে, তাঁদের জন্য ক্যাস্টর অয়েলই ভালো বিকল্প।

ভুরুর গঠন ও সাজসজ্জা:

ভুরুর শুরুটা হালকা, মাঝামাঝি ঘন এবং শেষপ্রান্ত সরু রাখা উচিত। এতে মুখে একটি স্বাভাবিক কাঠামো ফুটে ওঠে।

ভুরু ঘন দেখাতে কালো বা বাদামি ডাস্ট পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি তিন মাথা-যুক্ত আইব্রো পেনসিল দেবে প্রাকৃতিক চেহারার ছোঁয়া।

সাময়িক সমাধান হিসেবে ভুরু টিন্ট করানো যেতে পারে। এতে প্রতিদিন ভুরু আঁকার ঝামেলা থেকে মুক্তি মিলবে। তবে এটি অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করানো উচিত।

শেষ কথা—সৌন্দর্য কোনো নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলে বিচার করা যায় না। তবু, নিজের ভেতরের আত্মবিশ্বাসকে বাইরে প্রকাশ করার একটি সূক্ষ্ম মাধ্যম হতে পারে সুসজ্জিত ও সুশোভিত ভুরু। তাই রূপচর্চার আয়নায় চোখের পাশে থাকা এই দুটি রেখাকেই দিন একটু বাড়তি যত্ন।
মুখের গঠন অনুযায়ী ভুরুর আদর্শ আকৃতি কি হতে পারে

ভুরু কেবল চোখের ওপরে একটি রেখা নয় এটি মুখের গঠন, চাহনি এবং ব্যক্তিত্বে এনে দিতে পারে নাটকীয় পরিবর্তন। তাই মুখের গঠন বুঝে ভুরুর স্টাইল নির্বাচন করাই ভালো।
গোল মুখের জন্য

এই ধরনের মুখে ভুরুতে হালকা খাঁজ বা আর্চ থাকলে মুখ কিছুটা দীর্ঘ এবং পাতলা দেখায়। খাড়া ও মাঝারি আর্চবিশিষ্ট ভুরু গোল মুখে ভারসাম্য আনে।
চৌকো বা বর্গাকৃতি মুখের জন্য

এই মুখে চোয়াল থাকে কিছুটা প্রভাবশালী। তাই একটু মোটা ও গোলাকৃতি আর্চ-যুক্ত ভুরু চেহারায় মসৃণতা ও নারীত্ব এনে দেয়।
ডিম্বাকৃতি বা ওভাল মুখের জন্য

সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ মুখ এ ধরনের। তাই খুব বেশি পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না। হালকা খাঁজ বা প্রাকৃতিক ভুরুই এ মুখে সবচেয়ে মানায়।
লম্বা মুখের জন্য

এই মুখে ভুরুর আড়াআড়ি রেখা বা ফ্ল্যাট শেপ ভালো মানায়। এতে মুখ কিছুটা কম লম্বা দেখায় এবং ভারসাম্যপূর্ণ হয় চেহারা।
তিক্ষ্ণ বা হৃদয়াকৃতি মুখের জন্য

এই মুখে চিবুকের দিকটা সরু ও তীক্ষ্ণ হয়। একটু নিচু ও গোলাভাবে আর্চ-যুক্ত ভুরু মুখে কোমলতা আনে এবং চিবুকের শার্পনেসকে ভারসাম্য করে।
হীরের মতো মুখের জন্য

চওড়া গাল ও সরু কপাল এই মুখের বৈশিষ্ট্য। গোলাকৃতি আর্চ এবং কিছুটা ঘন ভুরু এই ধরনের মুখে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights